সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলায় ৯ কোটি ২৮ লক্ষ টাকায় হুড়াসাগর নদীর উপর দিয়ে চর জোকনালা গ্রামে ব্রীজ নির্মাণ কাজ হচ্ছে আর এ নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই পিলারের নিচে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ঘটনা জানাজানি হলে তাৎক্ষনিক এলাকায় হইঁচই পড়ে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানায়, বৃহস্পতিবার ব্রীজের নিচে পানি কমে যাওয়ার কারণে চারটি পিলারের মধ্যে একটি পিলারের নিচে ফাটল দেখা যায়। নিম্নমানের কাজের কারণে পিলারের নিচ অংশ থেকে চার পাশে ঢালাই প্লাস্টার খুঁলে গিয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাতের আধাঁরে মিস্ত্রি দিয়ে সেটা কোনমতে ঢেকে দিতে চেয়েছিল, তখন স্থানীয়রা সেটা বাঁধা প্রদান করে এবং কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে সেটা সমাধানের দাবী জানায়।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীর কুমার পোদ্দার জানান, এই ব্রীজের কাজ খুব ধীর গতিতে ৩-৪ বছর হলো করছে যার কারণে জনগন খুব ভোগান্তিতে আছে। ব্রীজটি নির্মানের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ এটার উপর দিয়ে যাতায়াত করবে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি অফিসের গাফিলতি এবং নিম্নমানের কাজ করার কারণে কাজ শেষ না হতেই ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ব্রীজে ভাড়ী যানবহন যখন চলাচল করবে যেকোন সময় ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ে যেতে পারে।
চর জোকনালা গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, রাত্রি ১টার দিকে ব্রীজের নিচে মোবাইলের আলো দেখে আমরা চোর মনে করেছিলাম, কয়েকজনকে সাথে নিয়ে এগিয়ে গেলে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে গ্রামবাসীর সহায়তায় তাদের আটক করলে ব্রীজের ফাঁটল মেরামত করতে এসেছি জানায়। এই ব্রীজটির কাজ শেষ হলে প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে।
রাতের আধাঁরে কাজ করতে আসা মিস্ত্রি শফিকুল ও স্বাধীন জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আমাদের ২০ হাজার টাকা বিনিময়ে রাতে গিয়ে বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ফাঁটলের স্থান ভরাট করতে বলে। কাজের সময় বিদ্যুতের লাইন বন্ধ ছিল তারপরও স্থানীয় জনগন আমাদের আটক করে।
ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম তুহিন জানান, দূর্নীতি অনিয়ম করে ব্রীজের কাজ হয়েছে। ব্রীজটি নির্মান কাজে এলাকার মানুষের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। সরকারি ভাবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা প্রয়োজন।
এলজিইডি অফিসের রোকনুজ্জামান জানান, অনেক ধীর গতিতে কাজ চলছিল, পাশাপাশি অনেক দিন কাজ বন্ধ থাকার পরে বর্তমানে কাজ চলমান আছে। ২০২১ সালের প্রথম দিকের কাজ, আমি দায়িত্ব নিয়েছি ২০২৩ সালের শেষের দিকে। আগে যখন কাজ করেছে পানি ছিল, পানির মধ্যে তো আর দেখা যায় নাই। বর্তমানে কাজের সুবিধার্থে দুদিন হলো সেচ এর মাধ্যমে পানি কমালে ফাঁটল চোখে পড়ে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ও সাগর জেবি কাজটি করছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ও সাগর জেবির দায়িত্বে থাকা সাগর জানান, বর্ষা মৌসুমে স্টীলের ফর্মা দিয়ে কাজ করার সময় হানিকম হওয়ার কারণে সমস্যাটি হয়েছে। পরে উপজেলা প্রকৌশলী সহ কর্তৃপক্ষের পরামর্শে সেটা বন্ধ করতে গেলে স্থানীয়রা ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। যার কারণে দিনে কাজ না করে রাতে মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করাতে চেয়েছিলাম।
সিরাজগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম জানান, ব্রীজের কাজের ভিডিও দেখেছি, যে কোন কারণে পানিতে প্লাস্টার কংক্রিট গুলো খুঁলে গেছে। এটার কি সমাধান দেওয়া যায় আলোচনা করে সেটা সিদ্ধান্ত নিবো।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সোহেল সরকার কর্তৃক লন্ডন যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত
সহ সম্পাদকঃ মোঃ ফরিদ হোসেন বার্তা বিভাগঃ জিয়াউল ইসলাম জিয়া
সাথী সোহেল জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন (আর্তমানবতার সেবায়) বিকাশঃ ০১৩০২৪৪৭৩৭৩