নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শরিফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তুষ্ট দেখা দিয়েছে। ফলে উত্তেজিত শ্রমিকরা ১৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধের ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার রূপসি এলাকায় অবস্থিত শরিফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার শ্রমিকদের মাঝে এ অসন্তোষ দেখা দেয়।
১৭ দফা দাবিগুলো হলো- নতুন কর্মচারী যারা যোগদান করবে তাদের বেতন ১৭ হাজার ৫শ টাকা করতে হবে ও ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ী করণের পর বেতন কাঠামো ২০ হাজার ৫শ টাকা করতে হবে, প্রতিবছরে বেতন ৩ হাজার টাকা বৃদ্ধি করতে হবে, দুই ঈদের বোনাস দিতে হবে বেতনের সমপরিমাণ ও বৈশাখি বোনাস দিতে হবে, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি চালু করতে হবে, নাইট ডিউটি থাকলে ৫০০ টাকা করে দিতে হবে, ওভারটাইম হার ১০০% দিতে হবে এবং বেতনের সঙ্গে দিতে হবে, দুপুরের খাবারের মান উন্নয়ন করতে হবে এবং সকালের নাস্তা দিতে হবে ওভারটাইম থাকলে নাস্তা বিল বাড়াতে হবে, মাহে রমজান মাসে ইফতারের মান ভালো করতে হবে এবং ক্যান্টিন বিল তিন হাজার টাকা দিতে হবে।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- কোম্পানি কর্তৃক কোনো শ্রমিককে যদি চাকরিচ্যুত করা হয় তাহলে তাকে কমপক্ষে তিন মাসের বেতন দিয়ে চাকরিচ্যুত করতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকর্মী থেকে শুরু করে সব কর্মচারীদের কর্ম ঘণ্টা আট ঘণ্টা করতে হবে, প্রোফিট বোনাস ৫% করে দিতে হবে, হাজিরা বোনাস দিতে হবে ১ হাজার টাকা, সব সরকারি ছুটি কোম্পানির ছুটির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ছুটির হয়রানি বন্ধ করতে হবে, বাসা ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে দিতে হবে, সুপারভাইজার ও অপারেটরদের বেতন ৬০ পার্সেন্ট বৃদ্ধি করতে হবে, শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা যাবে না আর চাকরিচ্যুত করা হলে সব শ্রমিকদের পক্ষে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কোম্পানিতে কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হলে কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, সর্বশেষ এডমিন ম্যানেজারের পদত্যাগ চাই।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরিফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার এডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন শ্রমিকদের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। বারবার মালিকপক্ষকে বলার পরও ইসমাইল হোসেনকে অপসারণ করা হয়নি।
এ ছাড়া শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে ওই ১৭ দফা দাবি জানিয়ে আসছিল মালিকপক্ষের কাছে। শ্রমিকদের ১৭ দফা দাবি না মানার কারণে শনিবার সকালে কাজে যোগদান না করে শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন।
এ সময় নানা ধরনের স্লোগানে ১৭ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন উত্তেজিত শ্রমিকরা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধের কারণে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে মালিকপক্ষ এডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনকে তাৎক্ষণিক অপসারণ করেন এবং অন্যান্য দাবি বিবেচনা করে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন শ্রমিকদের। পরে শ্রমিকরা শান্ত হয়ে কারখানায় গিয়ে কাজে যোগদান করেন।
শরিফ গ্রুপের এজিএম মো. মফিজুর রহমান বলেন, এখানে শরীফ গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান শরীফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানা। এই কারখানায় প্রায় ৪ শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক শরিফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার এডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনকে অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিগুলো মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বাস্তবায়ন করার জন্য বিবেচনা করা হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সোহেল সরকার কর্তৃক লন্ডন যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত
সহ সম্পাদকঃ মোঃ ফরিদ হোসেন বার্তা বিভাগঃ জিয়াউল ইসলাম জিয়া
সাথী সোহেল জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন (আর্তমানবতার সেবায়) বিকাশঃ ০১৩০২৪৪৭৩৭৩