
স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেলে দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের পুরানগাঁও পূর্বপাড়া এলাকায় অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩টি ট্রলি জব্দ এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ২নং ব্লকের পুরানগাঁও পূর্বপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র বসতবাড়ির আশপাশ ও সরকারি ভূমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এতে এলাকার দরিদ্র ও অসহায় মানুষের বসতভিটা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
ভুক্তভোগীরা জানান, দিনমজুর মো. মুর্শিদ মিয়ার বসতবাড়ির বিটার সংলগ্ন স্থান এবং সাদ্দাম হোসেন (পিতা: মতিউর রহমান)-এর পুকুর এলাকা থেকে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছিল। নিয়মিত ট্রলি চলাচলের কারণে মাটি সরে গিয়ে বসতবাড়ি ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়।
মো. মুর্শিদ মিয়া অভিযোগ করেন, বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলে সংশ্লিষ্টরা তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে তিনি দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবৈধ বালু উত্তোলনের পেছনে একটি প্রভাবশালী চক্র সক্রিয় ছিল, যাদের ছত্রচ্ছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চলছিল। ফলে নদী ও বসতভিটা ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি জনমনে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় শনিবার বিকাল ৪টার দিকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল মতিন খান-এর সরাসরি নেতৃত্বে দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের পুরানগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশের সহায়তায় ২টি পাথর ভর্তি ট্রলি ও ১টি বালু ভর্তি ট্রলি জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ট্রলিগুলোর ড্রাইভারকে জিজ্ঞেসে মালিক পরিচালক হিসেবে জামসেদ আলী নাম প্রকাশ পায়, অভিযানের সময় ট্রলিগুলোর চালকদের শনাক্ত করা হলেও তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
তবে স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী এসব বালু ও পাথর একটি সংঘবদ্ধ চক্র—‘জামসেদ গং’-এর মালিকানাধীন।
অভিযানকালে অবৈধভাবে সরকারি ভূমি থেকে বালু ও পাথর উত্তোলনের দায়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মতিন খান বলেন,
“অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন পরিবেশ, জননিরাপত্তা ও দরিদ্র মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য মারাত্মক হুমকি। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। সরকারি ভূমি রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অভিযান ও কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে অবৈধ বালু উত্তোলনের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এদিকে এলাকাবাসী সময়োপযোগী ও সাহসী অভিযানের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধে নিয়মিত অভিযান ও কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সোহেল সরকার কর্তৃক লন্ডন যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত
সহ সম্পাদকঃ মোঃ ফরিদ হোসেন বার্তা বিভাগঃ জিয়াউল ইসলাম জিয়া
সাথী সোহেল জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন (আর্তমানবতার সেবায়) বিকাশঃ ০১৩০২৪৪৭৩৭৩