রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ঐতিহাসিক গৌরাঙ্গ বাড়ি শ্রী পাট খেতুরী ধামকে ঘিরে দখলদারিতা, চাঁদাবাজি, তালা মারা ও বিভিন্ন অপকর্মের হুমকির অভিযোগ উঠেছে সুজন পাল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সুজন পাল—পিতা: লচমুন পাল, মাতা: শরশ্বতি পাল, গ্রাম: রাঙ্গা ডুমুরিয়া, ডাকঘর: প্রেমতলী, উপজেলা: গোদাগাড়ী, জেলা: রাজশাহী—দীর্ঘদিন ধরে শ্রী পাট খেতুরী ধামের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার হুমকি দিয়ে আসছেন।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপক শ্রী গোবিন্দ চন্দ্র পাল (বাড়ি: ডুমুরিয়া পালপাড়া, প্রেমতলী, গোদাগাড়ী, রাজশাহী) বলেন, সুজন পালের আচরণ সন্ত্রাসীদের মতো। তিনি ট্রাস্টের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এই ট্রাস্টের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থাপনার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ট্রাস্ট পরিচালনা করতে চাই।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সুজন পাল তাকে এক নম্বর আসামি করে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, সুজন পাল আওয়ামী লীগের আমলে ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে হেরোইন এবং মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে এবং ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
শেষে শ্রী গোবিন্দ চন্দ্র পাল আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও মানুষের নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিয়ে দ্রুত ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খেতুর ধাম ট্রাস্ট বোর্ডের কর্মচারী এবং এলাকাবাসী
হিন্দু সম্প্রদায়ের স্থানীয়রা বলেন, সুজন পাল এই ট্রাস্টের কেওনা তিনি অহেতুক ঝামেলা সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন পাল জানান- এসব
আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি এসবের সাথে জড়িত নই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ দিকে এখনো ক্ষুব্ধ রয়েছেন ট্রাস্ট কমিটি এবং এলাকাবাসী ও ভক্তবিন্দু সুজন পালকে গ্রেফতারের দাবি জানান হিন্দু সম্প্রদায়।
খেতুরীধামে প্রতিবছর সারা দেশ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ নরোত্তম ভক্ত এ উৎসবে যোগ দেন। অনেকেই অবস্থান করেন আশপাশের মুসলমানদের বাড়ির উঠানে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করেন।
প্রসঙ্গত, ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে ঠাকুর নরোত্তম দাস তৎকালীন গড়েরহাট পরগণার অন্তর্গত বর্তমান রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পদ্মা তীরের গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব পার করে ঠাকুর নরোত্তম দাস বৃন্দাবন অভিমুখে যাত্রা করেন। সেখানে নিখিল বৈষ্ণবকুল লোকনাথ গোস্বামীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে দীক্ষা লাভ করেন। পরে তিনি খেতুরে ফিরে আসেন। খেতুর মন্দিরে গড়ে তোলেন স্থাপনা। এরপর তিনিই প্রথমে এখানে এ উৎসবের আয়োজন করেন। ভক্তরা দূর-দূরান্ত থেকে তার কাছে এসে দীক্ষা গ্রহণ করতে শুরু করেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সোহেল সরকার কর্তৃক লন্ডন যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত
সহ সম্পাদকঃ মোঃ ফরিদ হোসেন বার্তা বিভাগঃ জিয়াউল ইসলাম জিয়া
সাথী সোহেল জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন (আর্তমানবতার সেবায়) বিকাশঃ ০১৩০২৪৪৭৩৭৩