মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ অপরাহ্ন
আজকের শিরোনাম
শেরপুরে মহান বিজয় দিবস উদযাপনও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জাল কাগজ ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগে লোহাগাড়ায় সংবাদ সম্মেলন জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন বগুড়া জেলা কমিটির উদ্যোগে বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জাতীয় মানবাধিকার অ্যাসোসিয়েশন বগুড়া জেলা কমিটির উদ্যোগে বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ভুরুঙ্গামারী সরকারি কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী সিরাজগঞ্জ ৩ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন পুনঃ বিবেচনার দাবিতে গণমিছিল  আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আমাদের দায়িত্ব ও জনগণের প্রত্যাশা – আরমান হোসেন ডলার লন্ডনে গ্রেটার চট্টগ্রাম এসোসিয়েশন, ইউকে’র উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত লালমনিরহাট টিটিসি’র প্রশিক্ষণের পরিবেশ বিনষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে গিয়াস উদ্দিন  ভুরুঙ্গামারীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

মিসেস ফারজানা শেখ সুমি বর্ষসেরা আলোকিত নারী সম্মাননায় মনোনীত

স্টাফ রিপোর্টার:: / ৫৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:

নারীর ক্ষমতায়ন ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে আত্মপ্রত্যয়ী সফল নারী শিল্পোদ্যোক্তা সুমি’স হট কেক এর সফল উদ্যোক্তা মিসেস ফারজানা শেখ সুমি জাতীয় জাগো নারী ফাউন্ডেশন কর্তৃক বর্ষসেরা আলোকিত নারী আজীবন সম্মাননা ২০২৪ এ মনোনীত হয়েছেন।

 

খুব শীঘ্রই জাঁকজমক পূর্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁকে আজীবন সম্মাননা ২০২৪ প্রদান করা হবে।

 

দেশবরেণ্য ও বর্ষসেরা আলোকিত নারী হিসেবে আজীবন সম্মাননায় মনোনীত বরেণ্য সমাজসেবী ও সার্থক নারীউদ্যোক্তার প্রতিকৃত মিসেস ফারজানা শেখ সুমি দেশের সুবিখ্যাত বেকারি শিল্প

 

সুমি’স হট কেক-এর সফল উদ্যোক্তা। অত্যন্ত বিনয়ী ও দৃঢ়চেতা সুমি, ঢাকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষা জীবন কাটে স্বনামধন্য স্কুল, শহীদ আনোয়ার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। শৈশব কেটেছিল অভিজাত গুলশান ও বনানি এলাকায়। তাঁর বাবা একজন সুপ্রতিষ্ঠিতও স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও সমাজহিতোষী ছিলেন। জীবনের শুরু থেকেই সুমি অত্যন্ত কর্মঠ এবং উদ্ভাবনী ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ছোটবেলা থেকে তিনি তার বোনদের সঙ্গে রান্নাঘরে বিভিন্ন ধরনের খাদ‍্য সমূহের রন্ধন প্রণালী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন এবং বিকেলের পারিবারিক চায়ের আড্ডায় প্রশংসিত হতেন যা তার উদ্ভাবনী স্পৃহাকে আরও উজ্জীবিত করে তুলতো।

 

 

মূলতঃ তার রন্ধনযাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। একজন বিমান বাহিনী কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে যখন বাচ্চার জন্মদিনের কেক কিনতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করেন, প্রচলিত বাজারে কেকের মূল্য এবং মান কোনটাই সংগতিপূর্ণ নয়। তখন তিনি নিজেই বাচ্চাদের জন্য কেক বানাতে শুরু করেন। কেকের স্বাদ ও মান আত্মীয়স্বজন ও সিনিয়র অফিসারদের কাছে খুবই পছন্দ হয়। তারা সুমিকে বিমান বাহিনীর ক্যান্টিনে তার বেকারি আইটেমগুলো সরবরাহ করার পরামর্শ দেন। মূলতঃ সেখান থেকেই তাঁর ব্যবসায়িক জীবনের হাতেখড়ি। ঘরে বসেই তিনি ২-৩ জন মহিলা সহকারী নিয়োজিত করে বিভিন্ন রকম বেকারি আইটেম প্রস্তুত করে সরবরাহ শুরু করেন।তিনি বাংলাদেশে বেকারি শিল্পে প্রবেশ করা প্রথম সফল নারী ছিলেন।

 

 

অল্প সময়ের মধ‍্যেই তার এই উদ‍্যোগ প্রশংসিত হতে শুরু করে এবং তার গন্ডি স্থানীয় পরিসর অতিক্রম করে সরকারী উর্ধতন মহল তথা কূটনৈতিক অংগনে বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে। এসময় বিমান বাহিনীর মহিলা সংগঠনের পক্ষ হতে পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ‍্যে কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ও অনুরোধে তিনি মহিলাদের জন‍্য বেকিং প্রশিক্ষন কার্যক্রম শুরু করেন এবং কিছুদিনের মাঝেই উল্লেখযোগ‍্য সংখ‍্যক নারীদের প্রশিক্ষনের মাধ‍্যমে স্বাবলম্বী করে তোলেন।

 

এখন তার প্রতিষ্ঠান, সুমি’স হট কেক লিমিটেড ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ৪২টি আউটলেট সফলতার সাথে চালাচ্ছে। কেকের মধ্যে বিখ্যাত ব্ল্যাক ফরেস্ট, মাড কেক, ভ্যানিলা, চকলেট এবং অন্যান্য ফ্লেভার রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য বেকারি পণ্য যেমন ব্রেড, মাফিন, বিস্কুট এবং ফাস্ট ফুড আইটেম যেমন পিজ্জা, বার্গার, স্যামোসা, সিঙ্গারা ইত্যাদিও তৈরি ও সরবরাহ করে থাকে। বর্ষসেরা আলোকিত নারী সুমি আজ অত্যন্ত গর্বিত যে তিনি মহিলাসহ পাঁচশতাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। তিনি নিজেও উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ, ভারত, তুরস্ক এবং থাইল্যান্ডে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। সুমির মূলনীতি হলো, সবার জন্য মানসম্পন্ন সুস্বাদু খাবার সাশ্রয়ী মূল্যে তাদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়া।

 

ফারজানা শেখ সুমি তার কর্মনৈপুণ্য.. এবং অর্জনের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন: ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে পর্যটন বেকারি অ্যাওয়ার্ড, ২০১৫ সালে ফুডি’স চয়েস অ্যাওয়ার্ড, ২০১৭ সালে উইমেন এন্টারপ্রেনিউর অ্যাওয়ার্ড, ২০১৬ সালে রন্ধনশিল্পী অ্যাওয়ার্ড, ২০১৮ সালে পাঠাও পাবলিক রিভিউ অ্যাওয়ার্ড।

 

একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তাঁর সফল যাত্রা আই, বি, এ ; ব্র‍্যাক ; নর্থ সাউথ ; আই, ইউ, বি সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্মানিত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ব‍্যাবসা প্রশাসন পাঠ‍্যসূচীতে ‘মডেল কেস স্টাডি’ হিসাবে সন্নিবেশিত করা আছে। উচৃচর বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের গবেষনার বিষয়বস্তু হিসাবে এখন ‘সুমি’স হটকেক চর্চা ও অধ্যায়ন করে থাকে।

 

প্রসংগত উল্লেখযোগ‍্য যে সুমির এই সাফল‍্য গাঁথর সুদীর্ঘ যাত্রাপথে প্রতিনিয়ত পাশে থেকে সহযোগিতার হাত যিনি প্রসারিত করেছেন তিনি আর কেউ নন তার জীবনচলার অনুপ্রেরণাকারী ও চিরসংগী স্বামী অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার শেখ মোহাম্মদ শাহজাহান।

 

সাংসার জীবনেও একজন সফল ও সার্থক নারী রত্নগর্ভা জননী । আলোকিত নারী সুমি তিন সন্তানের জননী। তাদের সুন্দর জীবন আলোকিত করে আছে দু’টি ছেলে ও এক মেয়ে।তারা প্রত্যেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পরে ‘ডিপ্লোমা ডি প্যাটিসেরি’ সম্পন্ন করে। বড় ছেলে ভারতের ‘লা ভন্-এ বেকারি এন্ড প্যাটিসেরি’ এবং ইতালিতে ‘অ্যাকাডেমিয়া ইতালিয়ানা শেফ’ এ পড়াশোনা করেন।

 

দ্বিতীয় পুত্র এবং কন্যা উভয়ই যথাক্রমে লন্ডন এবং ইস্তাম্বুলের ‘লে কর্ডন ব্লু’ তে তাদের ‘ডিপ্লোম ডি প্যাটিসেরি’ অর্জন করেছেন। তারা উভয়ে পারিবারিক ব্যবসায় দক্ষতা ও অবদান রাখতে বর্তমানে সুমি’স হট কেক লিমিটেডে যোগ দিয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ‍্য যে সুমির শ্বশুর বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যিনি তদানিন্তন পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং রাজকীয় ইরানি বিমান বাহিনীতে গর্বিত সদস‍্য হিসাবে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন, প্রাথমিক অবস্থায় সুমি’স হট কেক গড়ে তুলতে তিনি এ উদ‍্যোগে মূখ‍্য পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা পালন করেন।

 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল এর ভাষায় বলতে হয় “সেদিন সুদূরে নয়, যেদিন ধরণী গাহিবে পুরুষের সাথে নারীর ও জয় । কিংবা বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্ঠি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। বেগম রোকেয়ার দেখানো পথ পাড়ি দিয়ে সুমি আজ সারাদেশের হাজার হাজার নারী উদ্যোক্তার এক সফল আইডল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর