চাঁদাবাজি নয় নারী সংক্রান্ত ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে খুন হয় সাংবাদিক তুহিন
সাবরিনা জাহান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
/ ১৪০
বার দেখা হয়েছে
আপডেট:
শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫
শেয়ার করুন
সাবরিনা জাহান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৪০)। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৭টার দিকে মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ের ঈদগাহ মার্কেটে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে চান্দনায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের বড় ভাই মো. সেলিমের বর্ণনা অনুযায়ী, ঘটনার সময় তুহিন চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে বন্ধুর সাথে কথা বলছিলেন হঠাৎ এক নারীর সাথে একজন পুরুষের ধস্তাধস্তি দেখতে পান এরপর
কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে দা ও চাপাতি নিয়ে কোপাতে শুরু করেন তারেই ভিডিও ধারণ করেছিল সাংবাদিক তুহিন
সন্ত্রাসীদের কয়েকজন তাকে দেখে ফেলে তাকে ভিডিও ডিলিট করার কথা বললে ভিডিও ডিলিট না করে প্রাণ বাঁচাতে তিনি স্থানীয় চা দোকানি খায়রুল ইসলামের দোকানে আশ্রয় নেন। কিন্তু সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে, গলায়, কাঁধে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। গলার একটি অংশ কেটে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। অনেক লোকের ভিড় থাকা সত্ত্বেও ভয়ে কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।
নিহতের বন্ধু ও সাংবাদিক শামিম জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তি এক নারীর সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং ওই নারীকে আঘাত করেন। এরপর কয়েকজন দুর্বৃত্ত নারীর পক্ষ নিয়ে বাদশাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় বাদশা পালিয়ে যান। তুহিন রাস্তার পাশ থেকে এ দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা ভিডিও মুছে ফেলতে বলে। তুহিন অস্বীকার করায় তারা তাকে ধাওয়া করে এবং শেষ পর্যন্ত ঈদগাহ মার্কেটে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ওই নারী, গোলাপি, একজন কল গার্ল। তিনি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অর্থ লুটে নিতেন। ঘটনাটি চাঁদাবাজি নয়, বরং নারীসংক্রান্ত ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তুহিনকে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে এবং জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, গত বুধবার (৬ আগস্ট) সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনের জেরে (৭ই আগস্ট) তাকে সকাল পৌনে বারোটার দিকে পাথর দিয়ে দুই পা থেঁতলে আহত করেন বলে অভিযোগ স্বজন ও সহকর্মীদের একদিনে দুটি ঘটনার পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।