মো: আমির হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার:
সারাদেশের মতো হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ-১ সংসদীয় আসনেও (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তবে এবারের নির্বাচন ঘিরে এই আসনে রাজনৈতিক সমীকরণে এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় ভোটের মূল আলোচনায় এখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই)।
এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে দেখা দিয়েছে ইসলামপন্থী দলগুলোর ঐক্য। দীর্ঘদিনের আদর্শিক ও আকীদাগত ভিন্নতা পেছনে ফেলে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই) এবার ৮ দলীয় জোটের ব্যানারে একত্র হয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঐক্য সুনামগঞ্জ-১ আসনের ভোটের মাঠে সম্পূর্ণ নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে বিএনপির ভেতরেও চলছে মনোনয়ন ঘিরে জোর আলোচনা। দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে আছেন আনিসুল হক। তিনি দলীয় সাংগঠনিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠপর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান কামরুল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিবিড়ভাবে গণসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, বিএনপির মনোনয়ন না পেলে কামরুজ্জামান কামরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। এমন সিদ্ধান্ত নিলে বিএনপির ভোটব্যাংকে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সাধারণ ভোটারদের মতে, বিএনপি যদি একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে পারে এবং জামায়াত–চরমোনাই জোট শক্ত অবস্থানে থাকে, তবে লড়াই সীমিত হতে পারে দ্বিমুখীতে। তবে কামরুজ্জামান কামরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে নির্বাচনী মাঠে ত্রিমুখী লড়াই অনিবার্য হয়ে উঠবে, যা ফলাফলকে নিয়ে যাবে অনিশ্চয়তার দিকে।
সব মিলিয়ে বড় দলের অনুপস্থিতি, ইসলামপন্থী দলগুলোর অভূতপূর্ব ঐক্য এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণ—সবকিছু মিলিয়ে সুনামগঞ্জ-১ আসনের রাজনীতি এখন উত্তপ্ত ও কৌতূহলোদ্দীপক। সাধারণ ভোটাররা তাকিয়ে আছেন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার দিকে, যা নির্ধারণ করবে এই আসনের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক চিত্র।