বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন
আজকের শিরোনাম
সুনামগঞ্জের জয়নগর এলাকায় সুরমা নদীতে পুলিশের অভিযানে ভারতীয় অবৈধ ৩১টি গরু এবং নৌকসহ ২জন আটক স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. ওয়ালী তসর উদ্দিন এমবিই হাউস অব লর্ডসে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত কর্ণফুলীতে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন গ্রেফতার শেরপুরে অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: ১৪ লাখ টাকা জরিমানা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় টি আর ও কাবিখা প্রকল্পে ১৩৫টি উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন শেরপুরে ব্র্যাকের একসেলারেটেড এডুকেশন মডেল বাস্তবায়নে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোরের হয়বতপুরে এক গার্মেন্টস শ্রমিকের স্বপ্নভঙ্গ—প্রভাবশালী প্রতারকের ফাঁদে নিঃস্ব মাসুদ রানা পরিবার মধ্য পালশা একতা যুব সংঘ ক্লাবের উদ্যোগে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত শেরপুরে মহান বিজয় দিবস উদযাপনও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জাল কাগজ ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগে লোহাগাড়ায় সংবাদ সম্মেলন

হজ থেকে ফিরে যেমন হবে মুমিনের জীবন

অনলাইন ডেস্ক: / ১৫৪ বার দেখা হয়েছে
আপডেট: শনিবার, ২২ জুন, ২০২৪

আধ্যাত্মিক ও অভ্যন্তরীণ প্রাণশক্তিই ইবাদতের অন্যতম শর্ত। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, কোরবানিসহ ইসলামের প্রতিটি ইবাদতের বাহ্যিক আচরণের পাশাপাশি আছে অন্তর্নিহিত দর্শন। সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে যে হজ পালন করা হয়, তা শুধু তীর্থযাত্রা কিংবা ভ্রমণেই শেষ হয়ে যায় না।

 

হজ থেকে ফেরার পর করণীয় সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো—

তাওহিদ ও একত্ববাদের শিক্ষা নিয়ে ফেরা
হজ হলো তাওহিদ তথা আল্লাহর নিরঙ্কুশ একত্ববাদের আলোকে জীবন প্রতিষ্ঠার অন্যতম সহায়ক। কাজেই হজ থেকে ফিরতে হবে তাওহিদের দীক্ষা নিয়ে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে মহান হজের দিন মানুষের প্রতি (বিশেষ) বার্তা হলো, আল্লাহর সঙ্গে অংশীবাদীদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং তাঁর রাসুলের সঙ্গেও নেই। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৩)

পাপমুক্ত থাকার প্রতিজ্ঞা
হজ পাপ-পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র করে মানুষকে পরিশোধিত জীবনে ফিরিয়ে আনে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে আর তাতে কোনো ধরনের পাপাচারে লিপ্ত হয় না, সে সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতকের মতো নিষ্পাপ হয়ে (হজ থেকে) ফিরে আসে। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৪২৪)
তবে পাপমুক্তির সার্টিফিকেট পেয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার অবকাশ নেই। প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট পেলেই যেমন চাকরির গ্যারান্টি নেই; বরং সনদ সংরক্ষণ করতে হয় এবং প্রয়োজনে প্লেস করতে হয়, তেমনি হজে পাপমুক্তির সনদ পেলেও তা সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যথায় পরে তা কাজে আসবে না।

আখিরাতের সফরের প্রস্তুতি
হজের সফরের প্রতিটি ধাপ মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ইহরামের কাপড় মৃত্যুর পরে কাফনের পরিচয় বহন করে। অনেক স্টেশন পাড়ি দিয়ে হজে যেতে হয়। আখিরাতের সফরেও অনেক স্টেশন আছে। যেমন—মৃত্যু, কবর, বারজাখ, হাশর-নশর, পুলসিরাত, জাহান্নাম ও জান্নাত।

আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়া কিয়ামত-পরবর্তী পুনরুত্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তাই হজ থেকে ফিরে আখিরাতের প্রস্তুতি নিতে হবে।

দুই রাকাত নামাজ
হজ থেকে ফিরে এসে নিকটস্থ মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নাত। কাব বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখন মসজিদে (নফল) নামাজ আদায় করতেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৬৭৭)

গরিব-মিসকিনকে খাওয়ানো
হজ থেকে ফিরে শুকরিয়াস্বরূপ গরিব-মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনকে খাবারের দাওয়াত দেওয়া বৈধ। ফিকহের পরিভাষায় সেই খাবারকে ‘নকিয়াহ’ বলা হয়। জাবের বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় এসেছেন, তখন একটি গরু জবাইয়ের নির্দেশ দেন। জবাইয়ের পর সাহাবিরা তা থেকে আহার করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ৩০৮৯)

তবে অহংকার, লোক দেখানো ও বিশেষ উদ্দেশ্য সামনে রেখে এমন দাওয়াতের ব্যবস্থা করা ইসলাম অনুমোদন করে না। (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৭/১৮৫)

অভ্যর্থনা ও অভিবাদন
হাজিদের অভ্যর্থনা ও শুভেচ্ছা জানানো, তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, মোসাফাহা, কোলাকুলি করা এবং তাঁদের দিয়ে দোয়া করানো মুস্তাহাব। কিন্তু ফুলের মালা দেওয়া, তাঁদের সম্মানার্থে স্লোগান ইত্যাদি দেওয়া সীমা লঙ্ঘনের অন্তর্ভুক্ত। এসব কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। (আপকে মাসায়েল : ১/১৬২)

জমজমের পানি হাদিয়া
জমজমের পানি অন্য শহরে নিয়ে গিয়ে লোকদের পান করানো মুস্তাহাব। অসুস্থ রোগীদের গায়ে ব্যবহার করাও বৈধ। (মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ : পৃষ্ঠা-৩০৩)

আয়শা (রা.) জমজমের পানি সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন এবং বলতেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) জমজমের পানি সঙ্গে নিয়ে যেতেন। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১৫)

আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবকে হাদিয়া-তোহফা দেওয়া সুন্নত। কিন্তু মনের আগ্রহ ছাড়া শুধু প্রথা পালনের জন্য কোনো কাজ করা শরিয়তসম্মত নয়। (আপকে মাসায়েল : ৪/১৬১)

হাজি ও আলহাজ হওয়ার জন্য লালায়িত না হওয়া
‘নামাজি সাহেব’ হওয়ার জন্য যেভাবে নামাজ পড়া হয় না, তেমনি ‘হাজি সাহেব’ হওয়ার জন্য হজ পালন করা অবৈধ। তবে হ্যাঁ, মানুষ যদি এমনিতেই সম্মান করে ‘হাজি সাহেব’ বলে ডাকে, তাতে অসুবিধা নেই। কিন্তু নিজের নামের সঙ্গে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হাজি বা আলহাজ ব্যবহার করা কিংবা কেউ এই বিশেষণ বর্জন করায় মনঃক্ষুণ্ন হওয়া গর্হিত কাজ। (মুকাম্মাল মুদাল্লাল মাসায়েলে হজ ও ওমরাহ : পৃষ্ঠা-৩২১)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর