নাটোরে আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে রাতুল ইসলাম (সময়) (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা দায়রা জজ আদালত চত্ত্বরে ওই হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। হামলার শিকার রাতুল ইসলাম নাটোর শহরের কানাইখালী এলাকার রাজু আহমেদের ছেলে। এই ঘটনায় অস্ত্রসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো, নাটোর শহতলীর ফতেঙ্গা পাড়ার রাইজুল ইসলামের ছেলে সজীব (৩২), শহরের বঙ্গোজল এলাকার সেকেন্দারের ছেলে সুমন (৩৫), কানাইখালী এলাকার শওকতের ছেলে ইমন (২৮), গাড়ীখানা এলাকার সবুরের ছেলে সবুজ (২৭), দক্ষিণ পটুয়া পাড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে সোহাগ (৩০)। দুপুরে নাটোর সদর থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম আরো জানান, আদালত চত্ত্বর এলাকায় কতিপয় দুষ্কৃতিকারী এক যুবকের হাতের কব্জিতে কুপিয়ে আহত করেছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ৫জনকে গ্রেফতার করা। এসময় একটি চাইনিজ কুড়াল, চার রাউন্ড পিস্তলের গুলি, চারটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার ও তিনটি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত আরো কয়েকজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম বাবু ও রবিউল ইসলাম বাপ্পি জানান, রাতুল ইসলাম সময়সহ তারা কয়েকজন আদালতে একটি মামলার হাজিরা দিতে যান। এসময় প্রতিপক্ষ সজীব, সোহান, সুমনসহ কয়েকজন চাপাতি, রামদা, চাকু নিয়ে রাতুলের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রাণ রক্ষার্থে রাতুল দৌড়ে গিয়ে আইনজীবীদের বার ভবনে আশ্রয় নেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা সেখানেও ধাওয়া করে রাতুলের উপর দ্বিতীয় দফায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে রাতুলের বাম হাত রক্তাক্ত জখম হয়। পরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
প্রকাশ্য দিবালোকে আদালত চত্তরে এমন ঘটনায় আইনজীবি, বিচার প্রার্থীসহ সকলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
নাটোর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মুক্তা জানান, এই ধরণের ঘৃণিত ও নিন্দনীয় ঘটনায় আইনজীবী সমিতির জরুরী সভা ডাকা হয়েছে। সভায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। আদালত চত্ত্বর এলাকায় এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করবেন বলেও জানান তিনি।