সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী কালীপূজা উপলক্ষে তাড়াশ পৌর বাজার এলাকায় পাঠার মাংস বিক্রির ধুম পড়েছে। আর এই পাঠার মাংস কেজি দরে কিনছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পাশাপাশি সখের বসে অনেক মুসলমানদেরও এই মাংস কিনতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে প্রথাগত রীতি অনুযায়ী পাঠাবলীর মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে এ পূজা। কালী পুজাকে কেন্দ্র করে পৌর বাজারে ৮ থেকে ১০ টি অস্থায়ী মাংসের দোকান বসেছে যারা আজকে শুধু পাঠার মাংসই বিক্রি করছেন। তবে সবাই পেশাদার মাংস বিক্রেতা না, কেউ কেউ পারটাইম দোকানদার এরা নির্দিষ্টি কোন উৎসবের সময়ই মাংস বিক্রি করে থাকেন। পৌর এলাকার মাংস বিক্রেতা আপেল মাহমুদ বলেন, কালীপূজা উপলক্ষে আজ ১০ টি দোকান বসেছে, দোকান গুলিতে আজ প্রায় শতাধিক পাঠার মাংস বিক্রি হবে বলেতিার প্রত্যাশা। সাধারণত ছাগলের পাঠার মাংসই বেশী বিক্রি হয় তবে এর পাশাপাশি ভেঁড়ার পাঠার মাংসও বিক্রি হয়।
পাঠার মাংস কিনতে আসা পৌর সদরের বাসিন্দা সুকুমার বলেন, প্রতি বছর কালীপুজা উপলক্ষে এ ভাবে বাজার এলাকায় পাঠার মাংস বিক্রি হয়ে। প্রতি বছরের মতো এবারও মাংস কিনতে এসেছি। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার মাংসের দাম একটু বেশি। প্রতি কেজি মাংসের দাম দিতে হচ্ছে ১ হাজার টাকা। মাংসের দাম বিষয়ে বিক্রেতা মফিজ বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর বাজারে পাঠা দাম বেশি হওয়ায় মাংসের দাম একটু বেশি নিতে হচ্ছে। তারপরও মাংসের চাহিদা বেশ। এ বছর প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১ হাজার টাকায়।
তাড়াশ উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ সান্যাল বলেন, কালীপূজা অত্যন্ত পুরাতন একটি পূজা। যে পূজার প্রচলন সত্যযুগ বা সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকে। তাড়াশে ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন মিলে প্রায় ১২টি কালীপূজা হচ্ছে। তবে এলাকাবাসীর সনাতনী ভক্তির স্থান ও ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে তাড়াশ মহাশ্মশানে বার্ষিক কালীপূজাটি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি কালী পুজায় পাঠার মাংস খাওয়ার বিষয়ে বলেন, ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী পাঠার মাংস খাওয়া নিয়ে কিছু বলা নাই। এটি একটি আঞ্চলিক রেয়াজ। যা জমিদার আমল থেকে চলে আসছে। কথিত আছে এই দিনে পাঠার মাংস খেলে বাত হয় না বা বাত ব্যথার উপকার হয়। তাই জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই পাঠার মাংস খেয়ে থাকেন।
কালীপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, কালীপূজা যাতে সুষ্ঠু সুন্দর ও নির্বিঘ্নে সম্পর্ন হয় সে লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাক থাকবেন।