সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার জালালপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সরাতল গ্রামের বাসিন্দারা প্রায় ৪০ বছর জমির আইল দিয়ে চলাচল করতেন। স্কুল-কলেজ মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও চলাচল করতেন সড়ক বিহীন প্রান্তর দিয়ে।
দেশ স্বাধীন হলেও দেড় কিলোমিটার রাস্তার জন্য চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন এনায়েতপুর থানার এই সড়াতল গ্রামের বাসিন্দারা।
সরাতল গ্রামের বিশ্বনাথপুর (কাইজা মোড়) থেকে সরাতল মধ্যপাড়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার কোনো সড়ক ছিল না। রাস্তাটি নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সময় দাবি উঠলেও জন-প্রতিনিধিদের আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকেছে।
অবশেষে এনায়েতপুর থানার সরাতল গ্রামের বাসিন্দাদের নিজ উদ্যোগে নিজেরা স্বেচ্ছাস্রম দিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত জমির মাটি দিয়ে নির্মাণ করছেন প্রায় দেড় কিলোমিটার এই কাঁচা সড়কটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন এলাকাবাসী বিনা পারিশ্রমিকে ব্যক্তিগত জমি থেকে মাটি কেটে সকাল থেকে শুরু করে সারাদিন শ্রম দিয়ে এই কাঁচা সড়কটি নির্মাণ করছেন।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা, সরাতল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রওশন আলী বলেন সরাতল গ্রামের বিশ্বনাথপুর (কাইজা মোড়) থেকে সরাতল মধ্যপাড়া পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। এই দেড় কিলোমিটার কোন সড়ক না থাকার কারণে আমরা এলাকাবাসী জমির আইল দিয়ে চলাফেরা করতাম। সড়ক না থাকার কারণে স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হতো। বন্যার সময় আমাদের নৌকা ছাড়া চলার আর কোন উপায় ছিল না। কোন রোগীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতলে নিতে হলে চাঙ্গারি করে প্রায় দেড় কিলোমিটার জমির আইল দিয়ে হেঁটে মূল সড়কে গিয়ে তারপর গাড়িতে করে হাসপাতালে নিতে হত। আমরা বিভিন্ন সময় স্থানীয় এমপি , উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি।
পরবর্তীতে আমরা এলাকাবাসী সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের নিজ উদ্যোগে নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত জমির মাটি দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এই সড়ক নির্মাণ করব। আল্লাহর রহমতে আমরা এলাকাবাসী নিজেরা বিনা পারিশ্রময়কে শ্রম দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এই সড়ক নির্মাণ করছি। এই সড়ক যদি সম্পূর্ণ নির্মাণ করতে পারি তাহলে আমরা সরাতল গ্রামবাসী প্রায় ৪০ বছরের দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পাব।
আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি বললেন, সরাতল গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের মূল জমিদাতারা হলেন হাজী মোহাম্মদ মুসা সরকারের ৬ সন্তান, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আলহাজ্ব মোল্লা, গোলাম মোল্লা, আনোয়ার হোসেন, এবং আরো অনেকেই জমি দান করেছেন।
এলাকাবাসী বলেন, আমরা গ্রামবাসী ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমাদের নিজেদের উদ্যোগে নির্মাণ করা প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি পাকা করে দিলে আমরা গ্রামবাসী আরও উপকৃত হব।
সাত্তার আব্বাসী
০১৭১১৪৭৫৭৫২
১.১১.২০২৪ই;।