গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন ৩৮ নং ওয়ার্ডের দক্ষিন খাইলকুর এলাকায় জুট ব্যবসায়ীর নিকট পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জনমনে ও শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগি আবুল হোসেন (৫১) চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের নামে গাছা থানা একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন দীর্ঘ ৩০ বৎসর যাবৎ গাছা থানাধীন দক্ষিন খাইলকুর এলাকায় মের্সাস পপি এন্টারপ্রাইজ নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করিয়া আসিতেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন কামরুজ্জামান কামরুল প্রায় সময় ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের কাছে নগদ টাকা চাঁদা দাবী করিয়া আসিতেছিল। গত ০৯/১২/২০২৪ ইং রোজ সোমবার বিকাল আনুমানিক ০৪.৪৫ ঘটিকার সময় দক্ষিণ খাইলকুর তাহার গোডাউনে ট্র্যাক হতে জুট নামানোর সময় বিএনপি ৩৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, রাকিব (২৩), কার্টুন সুমন (৪৮), স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি নুরুজ্জামান রুবেল (৩৬ সহ তাহাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক তাদের সাথে থাকা রামদা, ছেন, চাপাতি, লোহারসহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বে-আইনী জনতাবদ্ধে অনধিকারে তাহার প্রতিষ্ঠানে আসিয়া ট্র্যাক হতে জুট নামানোতে বাধা প্রদান করে লেবারদের অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতঃ সভাপতি কামরুজ্জামান তাহার নিকট ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে। ভুক্তভোগি চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাইলে কামরুজ্জামানের হুকুমে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে সকলে তাহার উপর অর্তকিত ভাবে আক্রমন চালাইয়া এলোপাথারী ভাবে কিল, ঘুষি মারিয়া, তাহার বুক, পিঠ, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যপুরী ভাবে লাথি মুড়া মারিয়া জখম করে। তাহার গলা চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে।
তিনি আর বলেন কামরুজ্জামান কামরুল ও অন্যান্য ব্যক্তিগন মোবাইল, আসবাবপত্রসহ ভাংচুর করিয়া তিরাশি হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে অভিযুক্তগণ চলিয়া যাওয়ার সময় চিৎকার করিয়া বলিয়া যায়, যদি তাহার দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দেয় তাহলে তাহাকে এলাকায় ব্যবসা করিতে দিবে না, গোডাউনের আগুন দিয়ে জ্বালাইয়া পুড়িয়ে দেওয়া সহ খুন জখমের হুমকি প্রদান করে।
ব্যবসায়ী আবুল হোসেন তার এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা হীনতায় বাস করছেন।
অন্যদিকে গাছা থানাধীন ৩২ নং ওয়ার্ডের ডেগের চালার ফকির মার্কেট এলাকায়
গত বুধবার ৪/১২/২০২৪ ইং জুট ব্যবসা কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও পাঁচ রাউন্ড ফাঁকাগুলি বর্ষণ সহ কয়েকজন আহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও শ্রমিকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী শাওন (২৫) সাংবাদিকদের জানান ঘটনার সময় পথচারীরা ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করে ছুটে পালায় অনেকে বিভিন্ন দোকানের ভিতর আশ্রয় নিয়েছে। দুই থেকে তিনটা গলি শব্দ পেয়েছি। সুজন থানায় অভিযোগ করলে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। ভয়ে আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা না বলেও সাংবাদিকদের জানায়।
এলাকাবাসী ও ৩২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ অভিযোগে গাছা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী আদম আলী কে এক নাম্বার বিবাদী করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে গাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে ০৪/১২/২০২৪ইং রোজ বুধবার সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় ১নং বিবাদীর হুকুমে উল্লেখিত বিবাদীরাসহ তাহাদের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন পরস্পর যোগসাজসে একে অপরের সহযোগীতায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রত্যেকের হাতে ধারালো চাপাতি, সুইচ গিয়ার, লোহার রড ও লাঠি-সোটা সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-স্বস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বে-আইনী জনতাবদ্ধে অত্র গাছা থানাধীন ডেগেরচালা সাকিনস্থ ফকির মার্কেটস্থ আমার মালিকানাধীন হামিদপ্লাজা বিল্ডিং সংলগ্ন রাস্তার উপর আমার পথরোধ করতঃ অহেতুক অশ্লিল ভাষায় গালি-গালাজ শুরু করিয়া প্রাণ নাশের ভয়-ভীতি হুমকি দিয়া আমাকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিতে থাকে। ইহাতে আমি ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ করায় উল্লেখিত সকল বিবাদীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন করত।
এলোপাথারীভাবে কিল, মুহি, লাথি মারিয়া ও উপর্যপূরীভাবে বাইরাইয়া আমার মাখা, কপাল, কান, বুক-পিঠ সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। ২নং বিবাদী (রুহুল আমিন) আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাহার হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়া আমার মাথা লক্ষ্য করিয়া এলোপাথারী কোপ দিলে আমি সামান্য সরিয়া গেলে আমার ভাতিজার শ্যালক মোঃ শাওন (২৮) এর বাম হাতের কুনুই এর উপরে একাধিক আঘাত লাগিয়া কাটা রক্ষাক্ত জখম হয়। তখন আমাদের ডাক-চিৎকারে আশে-পাশের লোকজন আগাইয়া আসিতে থাকিলে ৭নং ( নাজিমুদ্দিনের ছেলে কালার মামুন) বিবাদী তাহার হাতে থাকা পিস্তল দিয়া ফাঁকা গুলি ছুরে। যাহার ফলে স্থানীয় লোকজন ও পথচারী ভীত হয়ে যায় এবং এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরে। তখন সকল বিবাদীরা পরবর্তীতে সুযোগমত আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনসহ আমার ব্যবসায় সহযোগী লোকজনদের প্রাণ নাশ করিবে মর্মে প্রকাশ্য হুমকি-ধামকি দিয়া সেখান থেকে চলিয়া যায়। পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন আমার ভাতিজার শ্যালক মোঃ শাওন কে আহত অবস্থায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর এ ভর্তি করেন।
জানা যায় কালক্ষেপণ করে গত ৮/১২/২০২৪ ইং রোজ রবিবার রাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী মোহাম্মদ রাশেদ এর উপস্থিতিতে গাছা থানায় বসে সমাধান করা হয়।
এ বিষয় নিয়ে গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী মোহাম্মদ রাশেদ সাথে কথা বললে তিনি বলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা থানায় বসে সমাধান করেছে। আবুল হোসেনের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপ পুলিশ কমিশনার অপরাধ দক্ষিণ এন এম নাসির উদ্দিন বলেন, উভয় বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।