বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০২ অপরাহ্ন
আজকের শিরোনাম
সুনামগঞ্জের জয়নগর এলাকায় সুরমা নদীতে পুলিশের অভিযানে ভারতীয় অবৈধ ৩১টি গরু এবং নৌকসহ ২জন আটক স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. ওয়ালী তসর উদ্দিন এমবিই হাউস অব লর্ডসে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত কর্ণফুলীতে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন গ্রেফতার শেরপুরে অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: ১৪ লাখ টাকা জরিমানা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় টি আর ও কাবিখা প্রকল্পে ১৩৫টি উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন শেরপুরে ব্র্যাকের একসেলারেটেড এডুকেশন মডেল বাস্তবায়নে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোরের হয়বতপুরে এক গার্মেন্টস শ্রমিকের স্বপ্নভঙ্গ—প্রভাবশালী প্রতারকের ফাঁদে নিঃস্ব মাসুদ রানা পরিবার মধ্য পালশা একতা যুব সংঘ ক্লাবের উদ্যোগে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত শেরপুরে মহান বিজয় দিবস উদযাপনও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জাল কাগজ ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগে লোহাগাড়ায় সংবাদ সম্মেলন

মসজিদের মুয়াজ্জিন যেমন হবেন

অনলাইন ডেস্ক: / ১১৭ বার দেখা হয়েছে
আপডেট: শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজান ইসলামের অন্যতম শিআর বা প্রতীক। ইসলামে আজান ও আজানদাতা মুয়াজ্জিনের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘জিন, মানুষসহ যারাই মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শোনে, তারা সবাই কিয়ামতের দিন তাঁর পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।’

(বুখারি, হাদিস : ৬০৯)
মসজিদে আজান দেওয়ার জন্য মুয়াজ্জিন নিয়োগ করাই উত্তম।

কেননা এখন মানুষের ধর্মীয় জ্ঞান ও দ্বিন পালনে আগ্রহ কমে গেছে এবং পার্থিব ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। নিয়োগপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন না থাকলে মসজিদে যথাসময়ে আজান না হওয়ার ভয় আছে। মনে রাখতে হবে, যে মসজিদে নিয়োগপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন রয়েছে সেখানে তাঁর অনুপস্থিতি বা অনুমতি ছাড়া অন্যদের আজান দেওয়া উচিত নয়। (আহকামুল আজানে, ওয়ান নিদায়ি ওয়াল ইকামাতি, পৃষ্ঠা-২৬০)
তবে মুয়াজ্জিন হওয়ার জন্য শরিয়ত কিছু শর্তারোপ করেছে।

নিম্নে যা তুলে ধরা হলো—
মুয়াজ্জিনের গুণাবলি ও শর্ত

কোনো ব্যক্তির আজান শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত গুণাবলি ও শর্ত পাওয়া আবশ্যক।

তাহলো—

১. মুসলিম হওয়া : সব আলেম একমত যে ব্যক্তির আজান শুদ্ধ হওয়ার জন্য মুমিন হওয়া আবশ্যক। কেননা আজান একটি ইবাদত এবং কোনো অমুসলিম ইবাদতের যোগ্য নয়। এ ছাড়া দ্বিনের ব্যাপারে তার সাক্ষ্য ও কথা গ্রহণযোগ্য নয়।

২. ভালো-মন্দের পার্থক্যকারী হওয়া : বেশির ভাগ আলেম এ বিষয়ে একমত যে আজান শুদ্ধ হওয়ার জন্য মুয়াজ্জিনের সাবালক হওয়া শর্ত নয়, বরং তার যদি ভালো-মন্দের পার্থক্য করার মতো জ্ঞান থাকে তাহলেই আজান শুদ্ধ হয়ে যাবে। কেননা যে ব্যক্তি ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না সে ইবাদতের জন্য নির্দেশপ্রাপ্ত নয় এবং তার সংবাদও গ্রহণযোগ্য নয়। তবে কারো কারো মতে, আজান সঠিকভাবে দিতে পারে এবং উচ্চারণও শুদ্ধ হয়, এমন সাবালক ব্যক্তির উপস্থিতিতে নাবালকের আজান মাকরুহ।

৩. পুরুষ হওয়া : বেশির ভাগ আলেমের মতে, মসজিদের জামাতের জন্য যে ব্যক্তি আজান দেবে তার জন্য পুরুষ হওয়া আবশ্যক। জমহুর আলেমের মতে, পুরুষের নামাজের জন্য নারীদের আজান দেওয়া হারাম এবং তার আজান শুদ্ধ হবে না।

তবে হানাফি মাজহাব অনুসারে কোনো নারী আজান দিয়ে ফেললে তা শুদ্ধ হবে। তবে তা মাকরুহ হবে। এমন পরিস্থিতিতে আবার আজান দেওয়া উত্তম।

৪. সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া : হানাফি মাজহাব অনুসারে যে ব্যক্তি আজান দেবে তার জন্য সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া উত্তম। কোনো পাগল বা জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে এমন ব্যক্তি আজানের শব্দ যথাযথভাবে উচ্চারণকরত আজান দিলে তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার আজান দেওয়া উত্তম। অন্যান্য ইমামের মতে, সুস্থ মস্তিষ্ক ও জ্ঞান-বুদ্ধির অধিকারী না হলে ব্যক্তির আজান শুদ্ধ হবে না।

৫. ন্যায়পরায়ণ হওয়া : মুয়াজ্জিনের জন্য আদেল বা ন্যায়পরায়ণ হওয়া উত্তম। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ব্যক্তি তাকওয়া ও পরহেজগারির অধিকারী হবে। কবিরা গুনাহ থেকে সর্বতোভাবে বেঁচে থাকবে এবং সগিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইমাম হচ্ছেন জিম্মাদার এবং মুয়াজ্জিন আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামদের সঠিক পথ প্রদর্শন করুন এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করে দিন।’ (সুনানু আবি দাউদ, হাদিস : ৫১৭)

৬. সুকণ্ঠের অধিকারী হওয়া : মুয়াজ্জিনের জন্য সুকণ্ঠের অধিকারী হওয়া উত্তম। অর্থাৎ যার কণ্ঠস্বর উঁচু ও সুমিষ্ট হবে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বেলাল (রা.)-কে মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন, তার কণ্ঠস্বর উঁচু ও লম্বা।(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৯)

৭. নামাজের সময় সম্পর্কে অবগত

হওয়া : মুয়াজ্জিনের জন্য নামাজের সময় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখা মুস্তাহাব, যাতে ওয়াক্তের ব্যাপারে তিনি সতর্ক থাকেন এবং যথাসময়ে আজান দেন। এ জন্য অন্ধ ব্যক্তির চেয়ে দৃষ্টিশক্তির অধিকারী ব্যক্তি উত্তম। কেননা অন্ধ ব্যক্তি ওয়াক্ত প্রবেশ করেছে কি না সেটা জানতে পারে না।

(বাদায়িউস সানায়ে : ১/১৫০; আহকামুল আজানে, ওয়ান নিদায়ি ওয়াল ইকামাতি, পৃষ্ঠা-২৫৬; আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা : ২/৩৬৮)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর