সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় ৮বছর বয়সী শিশু সুবর্ণাকে দল বেঁধে ধর্ষণ ও হত্যার রহস্য সাত বছর পর উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার সাথে জড়িত দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্ষনের পর শিশুটিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলেও আটক আসামীরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো- হত্যাকান্ডের শিকার শিশুর ফুপাতো ভাই ও চৌহালী উপজেলার দত্তকান্দি গ্রামের আব্দুল হকের সাব্বির হোসেন (২০) ও একই গ্রামের আরফান মেম্বারের ছেলে শাকিব খান (২১)। হত্যাকান্ডের শিকার শিশু সুবর্না খাতুন চৌহালী উপজেলার দত্তকান্তি গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে। সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার রেজাউল করিম আসামীদের ১৬৪ বরাত দিয়ে জানান, ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ শিশু সুবর্না দত্তকান্দি হাইস্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যায়। এ সময় সে তার ফুফাতো ভাই সাব্বির সাথে স্কুলে মাঠে বালি দিয়ে খেলা করে। এক পর্যায়ে একই গ্রামের রশিদ মেম্বরের ছেলে মিলন পাশা শিশুটির ফুফাতো ভাই সাব্বিরকে ডেকে সাত হাজার টাকা দেয়ার লোভ দেখিয়ে মেয়েটি একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যেতে বলে। সাব্বির লোভে পড়ে মেয়েটিকে নির্জন এলাকায় শিমুলিয়া চরের ফসলের মাঠে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে সাব্বিরসহ ৮জন মেয়েটিকে দলবেঁধে ধর্ষন করে। মেয়েটি নিস্তেজ হলেও সবাই বলে দিবে বলে কাঁদতে শুরু করে। এ সময় সকলেই মেয়েটিকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং পরনে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ও বালি দিয়ে ঢেকে সকলেই চলে যায়।
পরদিন পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা থানায় মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ মামলার ফাইনাল দিলে বাদী নারাজি দেন। আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০১৯ সাল থেকে পিবিআই মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।
পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ১৯ এপ্রিল শিশু সুবর্ণার ফুপাতো ভাই ছাব্বির হোসেনকে ঢাকার শ্যামলী থেকে গ্রেফতার করে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চৌহালী উপজেলার দত্তকান্দি থেকে শাকিব খান (২১) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেন। পরে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। তিনি আরো জানান লোমহর্ষক মামলায় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।