শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
আজকের শিরোনাম
সৎ মানবাধিকার সংবাদকর্মী বগুড়ার জেলার লতিফুর রহমান আর নেই, বিভিন্ন মানবাধিকার নেতাদের শোক। তাহিরপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হিন্দু পরিবারের বোরো জমি দখল তাহিরপুর বাদাঘাটে ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের গ্রাহক সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের জয়নগর এলাকায় সুরমা নদীতে পুলিশের অভিযানে ভারতীয় অবৈধ ৩১টি গরু এবং নৌকসহ ২জন আটক স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. ওয়ালী তসর উদ্দিন এমবিই হাউস অব লর্ডসে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত কর্ণফুলীতে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন গ্রেফতার শেরপুরে অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: ১৪ লাখ টাকা জরিমানা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় টি আর ও কাবিখা প্রকল্পে ১৩৫টি উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন শেরপুরে ব্র্যাকের একসেলারেটেড এডুকেশন মডেল বাস্তবায়নে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোরের হয়বতপুরে এক গার্মেন্টস শ্রমিকের স্বপ্নভঙ্গ—প্রভাবশালী প্রতারকের ফাঁদে নিঃস্ব মাসুদ রানা পরিবার

খানসামায় বাড়ি বাড়ি জ্বরের রোগী, সেবা দিতে হিমশিমে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা 

এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: / ১৮২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট: মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

*হাসপাতালে ভর্তি রোগীর অধিকাংশ জ্বর-কাশির রোগী, মেঝেও জায়গা নাই

*বাজারে প্যারাসিটামল ঔষধ সংকট

গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় হঠাৎ বেড়েছে জ্বর, গলাব্যথা কাশি ও সর্দি রোগীর সংখ্যা। উপজেলার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি এখন জ্বরের রোগী। চলমান
বিরুপ আবহাওয়ার কারণে এই সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শয্যা সংকটে মেঝেতে চলছে চিকিৎসা সেবা।
এতে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স-মিডওয়াইফ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই সাথে উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসীতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ সংকটের খবর পাওয়া গেছে।

তাই আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া, সুতি কাপড় পরা এবং বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

ঋতুচক্রের পরিক্রমায় প্রকৃতির খরতাপ অপরিচিত নয়। তবে প্রকৃতির চিরচেনা এই রূপে গত কয়েক বছর ধরে চলছে ছন্দপতন। এতে শুধু মানুষই নয়, নাভিশ্বাস অবস্থা সমগ্র প্রাণ-প্রকৃতির। ভয়াবহ খরতাপে সড়কে কম মানুষের দেখা মিললেও সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র হাসপাতালে। উষ্ণতম দিনের সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যাও।

সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে সরেজমিনে পাকেরহাটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা ঘুরে দেখা যায়, পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের বেডগুলো ভর্তিরোগী দিয়ে পূর্ণ। সেই সাথে রোগীর সংখ্যা বেশী হওয়ায় বারান্দা ও মেঝেতেও রোগী ভর্তি আছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০২ জন। এরমধ্যে জ্বর-কাশির রোগী প্রায় ৭০ জন। ঈদের দিন থেকে সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহ প্রায় ৫০০ জনের অধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩০০ জন জ্বরের রোগী। এছাড়াও প্রতিদিন জরুরী বিভাগ ও ইনডোরে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন প্রায় ৩শ রোগী। এর মধ্যে অধিকাংশ জ্বর, সর্দি, কাশি ও ব্যাথার রোগী।

জানা যায়, গত ২০২১ সালের জুলাই মাসে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতীকরণসহ সেবা কার্যক্রম চালুর প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু এতদিনেও জনবল ও বরাদ্দ পায়নি। সেই সাথে ৩১ শয্যারই জনবল সংকট। এই সংকটের মধ্যেও সেবা দিচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা।

জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে গোয়ালডিহি গ্রামের লাবিব (০৫) নামের এক শিশু রোগী হাসপাতালের বারান্দায় ভর্তি রয়েছেন। তাঁর অভিভাবক হালিমা খাতুন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমার ছেলের জ্বর-সর্দি এতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও কমেনি। তাই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সেবা নিয়েছি।

সর্দি-জ্বর চিকিৎসার জন্য পাকেরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন গুলিয়ারা গ্রামের মিনতি রায় (৪০)। তিনি বলেন, হঠাৎ জ্বর ও শরীর ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসলে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। তাই বেড ফাঁকা না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি।

কেউ দুই দিন আবার কেউ চার দিন ধরে বারান্দায় থেকে নিচ্ছেন জ্বর,সর্দি-কাশির মতো সংবেদনশীল রোগের চিকিৎসা৷ শুধু বারান্দায় না এমন চিত্র এই হাসপাতালের মেঝেতেও অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পাকেরহাট এএফআর মেডিসিন মার্টের সত্ত্বাধিকারী বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ঈদের ছুটি ও গত সপ্তাহ থেকে জ্বরের রোগী বাড়ার সাথে বাজারে কিছু কোম্পানির প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ সংকট আছে। তবে এটি ২-১ দিনে স্বাভাবিক হবে বলে কোম্পানির বরাত দিয়ে তিনি নিশ্চিত করেছেন। সেই সাথে কোম্পানি এন্টিবায়োটিক ঔষধের দাম বৃদ্ধি করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, ভাইরাস ও আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে জ্বর ও কাশির রোগী বেড়েছে। এতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ এমন রোগে আক্রান্ত হলে এ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অথবা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান রইলো। সেই সাথে জনবল ও বরাদ্দ সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতেছি। এই অবস্থায় সেবা গ্রহণে সকলকের সহযোগিতা চান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর