পাঠদান কার্যক্রমে এখনও ঢিমে তাল কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রাথমিক,মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে। শিক্ষার্থীদের চেয়ে এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে অনিহা বেশি যেন শিক্ষকদের। দৌলতপুর উপজেলার ৩শ’৩৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগেরই পাঠদান কার্যক্রমের নাজুক পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিতেও সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন দৌলতপুরের খোদ শিক্ষা কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকলেও নিয়মিত পাঠদান যথারীতি চলছে না। শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে আসলেও ঘুরেফিরে গল্প করেই সময় কাটাচ্ছে সহপাঠীদের সাথে। আর এমন দৃশ্য চলছে দীর্ঘদিন।
নার্সিং ইন্সটিটিউটের একজন, কলেজের দু’জন, মাধ্যমিকের দু’জন, প্রাথমিকের একজন, কারিগরি একজন এবং একজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মন্তব্যে জানা যায়, অনেক শিক্ষক এখন রাজনৈতিক মোড়কে গিয়ে রাজনীতি নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে ব্যাস্ত থাকছেন, আবার অনেক শিক্ষক রাজনৈতিক কারণেই এখন আত্মগোপনে, এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষেও শিক্ষার্থীদের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়া হচ্ছে না। উপজেলাটির অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নিয়মনীতির বাইরে চলছে, শ্রেণী কার্যক্রম নেই বললেই চলে বলে মন্তব্য শিক্ষার্থীদের।
পিপুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরোজুল ইসলাম জানান, সরকার পরিবর্তনের সময়টাতে পাঠদান কার্যক্রম ভেঙে পড়লেও আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে নতুন উদ্যমে চলানোর চেষ্টা করছি।
খাস মথুরাপুর পিপলস কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা মন্তব্য করেন, প্রথমত যেসব শিক্ষকরা মনে করছেন তারা রাজনৈতিক ভাবে দলীয় ক্ষমতায় চলে এসেছে তারা কলেজে নিয়মিত কাজ করছেন না। পাশাপাশি যারা ভিন্ন মতাদর্শের তাদেরও কেউ কেউ আত্ম ভয়ে কলেজে আসছেন না। শিক্ষকদের বিশৃঙ্খলার জন্য শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে ক্লাস মুখী হচ্ছে না। শুধু মথুরাপুর কলেজই না, দৌলতপুরের বিভিন্ন কলেজসহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা একই বলেও দাবি করেন এই জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।
তবে এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাঈদা সিদ্দিকা দাবি করেন, প্রাথমিক শিক্ষায় খুব একটা সমস্যা নেই। গ্রাম পর্যায়ের শিশুদের স্কুলে আগ্রহী করতে দুপুরের খাবার সহ গুণগত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতে বেশকিছু পদক্ষেপ দরকার।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, দুটি উচ্চমাধ্যমিকে প্রতিষ্ঠান প্রধান আসছেন না। দুটি মাধ্যমিকেও আছেন না। তাতে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দিন দিন প্রতিষ্ঠানে আসতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
তবে, দৌলতপুরে অন্তত ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না বলে জানা গেছে। নিয়মিত অনুপস্থিত থাকছেন বেশকিছু সহকারী শিক্ষকও। সবচেয়ে বেশি সংখ্যা প্রতিষ্ঠানে সাময়িক উপস্থিত হওয়া ও শ্রেণী কার্যক্রমে উপস্থিত না হওয়া শিক্ষকদের।
এর আগে, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হয়।