মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
আজকের শিরোনাম
শেরপুরে মহান বিজয় দিবস উদযাপনও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জাল কাগজ ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগে লোহাগাড়ায় সংবাদ সম্মেলন জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন বগুড়া জেলা কমিটির উদ্যোগে বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জাতীয় মানবাধিকার অ্যাসোসিয়েশন বগুড়া জেলা কমিটির উদ্যোগে বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ভুরুঙ্গামারী সরকারি কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী সিরাজগঞ্জ ৩ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন পুনঃ বিবেচনার দাবিতে গণমিছিল  আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আমাদের দায়িত্ব ও জনগণের প্রত্যাশা – আরমান হোসেন ডলার লন্ডনে গ্রেটার চট্টগ্রাম এসোসিয়েশন, ইউকে’র উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত লালমনিরহাট টিটিসি’র প্রশিক্ষণের পরিবেশ বিনষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে গিয়াস উদ্দিন  ভুরুঙ্গামারীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

ছেলের কথা এখনও কানে বাজে: আবরারের মা

অনলাইন ডেস্ক: / ৮৭ বার দেখা হয়েছে
আপডেট: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪

“আসামিদের মধ্যে এখনও যে তিনজন পলাতক রয়েছে। তাদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয় এবং

রায়টা যেনো দ্রুত কার্যকর করা হয়।”

“মোবাইল ফোনটাই ওর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ালো, আমি কি জানতাম যে মোবাইলে ফেইসবুকে পোস্ট করে ওর জীবন যাবে? তাহলে তো কিনেই দিতাম না।”

পুলিশের কাছ থেকে ফেরত পাওয়া মোবাইল ফোন আর ল্যাপটপ নাড়াচাড়া করতে করতে প্রলাপ করছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন।

রোববার বিকালে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের পাশে আবরারের বাড়িতে কথা হয় রোকেয়া খাতুনের সঙ্গে। আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ ব্র্যাকের নিরীক্ষক। তিনি ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে একাই থাকেন আবরারের মা।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার। বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।

পাঁচ বছর ধরে ছেলের ব্যবহৃত হাতঘড়ি, দুটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, নামাজের টুপি, তসবি, ব্রাশ, চকলেট, জুতা, জামাকাপড়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডসহ নিত্য ব্যবহারের জিনিসগুলো পরম যত্নে আগলে রেখেছেন মা রোকেয়া।

তিনতলা বাড়িটির নিচতলায় থাকে আবরারের পরিবার। একটি কক্ষ বেশ পরিপাটি। খাটের এক পাশে আলমারিতে ছেলের পাওয়া বিভিন্ন পুরস্কার সাজিয়ে রাখা আছে। সবশেষ ছেলেকে কিনে দেওয়া নতুন জামাটিও রয়েছে মায়ের সংগ্রহে। থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন ছেলের পড়ার বইগুলোও।

পুরো বাড়িতে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা ছেলের স্মৃতির সঙ্গে মনে মনে কথা বলে একাকী দিন কাটে রোকেয়া খাতুনের

তিনি ছেলের স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, “যেদিন আমার ছেলে বাড়ি থেকে গিয়েছিলো সেদিন ছিলো ৬ তারিখ রোববার। পাঁছ বছর পরে আজকে ঠিক সেই রোববার আর ৬ তারিখ। আজকের এই দিনেই সকালে ছেলেকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে এসেছিলাম।

“বার বার ফোন দিয়ে জানাচ্ছিল কোথায় আছে। জ্যাম ছিলো না, তাও বার বার বলছিলো যে দেরি হচ্ছে। হয়তো এটাই ছিলো ওর জীবনে শেষ যাত্রা।”

ছেলের কথা বলতে বলতে দুই চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল রোকেয়া খাতুনের। পরনের কাপড়ে চোখ মুখে বলেন, “সেদিন কেউ এগিয়ে আসে নাই। কত ছাত্র ছিলো দারোয়ান ছিল কেউ আসেনি।

“আমার ছেলেকে ওরা ‘শিবির’ বলে মেরে ফেলেছে। অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে। ছেলের কথাগুলো আমার কানে বাজে। আজ পাঁচ বছর চলে গেছে আমি কিছুই ভুলতে পারিনি।”

আবরার সব সময় দেশেকে ভালোবেসে লিখতেন বলেও জানালেন তার মা। বলেন, “আমার ছেলে দেশের মানুষের জন্য ফেইসবুকে ইলিশ মাছ নিয়ে লিখেছিলো। পানি চুক্তির অসমতা নিয়ে লিখেছিলো।

“ও দেশকে অনেক ভালোবাসতো। কোনো দল বা রাজনীতির কারণে ফেইসবুকে লিখেছিলো না। আমরা সবাই চাই দেশের সাধারণ মানুষগুলো ভালো থাক।”

আবার হত্যাকাণ্ডের দুই বছর দুই মাস পর ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান মামলার রায়ে ২০ জনকে ফাঁসি ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন দেন। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি ও আসামিদের ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

এ প্রসঙ্গ টেনে সব আসামির দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের দাবিও জানিয়েছেন রোকেয়া খাতুন।

তিনি বলেন, “আসামিদের মধ্যে এখনও যে তিনজন পলাতক রয়েছে তাদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয় এবং রায়টা যেনো দ্রুত কার্যকর করা হয়। তবে জেল থেকে খুনিরা পালিয়ে গেলো কি-না, সেটাও আমি আশঙ্কা করছি।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর