রাউজান(চট্টগ্রাম)উপজেলা সংবাদদাতা
রাউজানে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে হত্যা করেছে কমর উদ্দিন জিতু (৩৬) নামে এক যুবদল কর্মীকে। শনিবার রাত ০৯টা৪০মিনিটের দিকে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে আমির হাট বাজার ব্যবস্থাপনা অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।নিহত কমর উদ্দিন জিতু হলদিয়া ইউনিয়নের ০২নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সর্ত্তা গ্রামের মনুপেঠান তাঃবাড়ীর আলহাজ্জ মুহাম্মদ আলীর ছেলে। জানাগেছে হলদিয়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা জামাল উদ্দিন তালুকদার,মঈনুদ্দিন বিপুল,কমর উদ্দিন এরা মিলে বাজার অফিসে এখনো কেন ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি ফজলে করিমের ব্যানার টাংগানো জানতে চান বাজার কিমিটির সভাপতি সেক্রেটারীর কাছে।বাজার কমিটি সুন্দর জবাব উপস্থাপন করায় জামালরা শান্ত হয়ে যান।তবে তারা ব্যানারের ভিডিও করে রাখেন।সে মুহুর্তে জামাল আর বিপুলের দাবী হঠাৎ উপজেলা বিএনপি’র সদস্য মহিউদ্দিন জীবন সেখানে এসে উপস্থিত হন ২০/৩০ জন কিশোর গ্যাং সহ। কিছু বুজে উঠার আগেই শুরু হয় মারপিট।এক পর্যায়ে যুবদল কর্মী জিতুকে বেধড়ক পিটিয়ে সারা শরীর ও মাথা রক্তাত্ত করা হয়।ছুরির আঘাতে বেহুশ হয়ে যায় জিতু। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এস এম কামাল।তিনি হামলাকারীদের নিভৃত করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন।তিনি নিজেও মাঠিতে পড়ে গিয়ে কিল ঘুষির শিকার হন বলে এ প্রতিনিধির কাছে দাবী করেন।এসময় জামাল ও বিপুল মারপিটের শিকার হন।তারা সেখান থেকে পালিয়ে প্রানে রক্ষা পান।মঈনুদ্দিন বিপুল শনিবার মধ্য রাতে চমেকের জরুরী বিভাগের সামনে সাংবাদিকদের জানান মহিউদ্দিন,নুরু,নয়ন আমার বন্ধু জিতু হত্যার সাথে জড়িত।স্থানীয় সূত্র মতে ঘটনার পরপর জিতুকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।সেখানে জিতু মারা যান।হলদিয়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা জামাল উদ্দিন তালুকদার বলেন প্রথমে জিতুকে ছুরিকাঘাত পরবর্তী মাথায় আঘাত করায় তার মৃত্যু হয়েছে।অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপি’র সদস্য ও হলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মহিউদ্দিন জীবন মুঠো ফোনে বলেন আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাকে স্থানীয় লোকজন গণপিঠুনি দিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়।আজ আমি রাউজান উপজেলা সদরে দলীয় ইফতার মাহফিলে ছিলাম। এদিকে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ অভিযানে নেমে গর্জনিয়া আবদুল কাদের প্রকাশ কলা কাদের,ও একই এলাকার আবদুল হাদীর ছেলে খোরসেদের ঘর ঘেরাও করে তাদের আটকের চেষ্টা করেছেন।কিন্তুু পুলিশ আসার খবরে তারা আগেই পালিয়ে যায় বাড়ী থেকে।সূত্র জানায় কাদের আর খোরসেদদের সাথে গত ৩১জানুয়ারি শুক্রবার জুমার নামাজের আগ মুহুর্তে আমিরহাট বাজারে তুমুল মারপিট হয়েছিল।সেদিনের ঘটনায় খোরসেদকে ছুরি মেরেছিল প্রতিপক্ষ।সেদিন খোরশেদ গুরুতর আহত হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হন।কাদেরকেও সেদিন মেরে আহত করা হয়।এঘটনার রেশ থাকলেও তা সেসময় সিনিয়র বিএনপি নেতারা মিটমাট করে তাদের মধ্যে মিলিয়ে দেন।এরপরও ঘটনা চক্রে শনিবারের জিতু হত্যায় তাদের হাত আছে কিনা তা তদন্ত করতে কাদের ও খোরসেদের ঘরে পুলিশ অভিযান চালান।
এদিকে জিতুর ফেইসবুকে দেয়া নুরু আর মহিউদ্দিনকে নিয়ে একটি নেগেটিভ লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলের নজরে এসেছে। নেগেটিভ স্ট্যাটাসটিও ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।এদিকে এঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।সম্প্রতি প্রবাস থেকে আসা কমর উদ্দিন জিতুরা দুভাই।সে ছিল সবার ছোট।তার স্ত্রী,২ছেলে,১মেয়ে রয়েছে।রাত ৩টায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় মা-বাবা,বোন বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন।তাদেরকে শান্তনা দিয়ে ছেলের শোক বুলানো যাচ্ছিলনা।উত্তরজেলা যুবদলের সহ সভাপতি সাবের সুলতান কাজল বলেন আওয়ামী কিশোর গ্যাংরা কিছু নামধারী বিএনপির ছত্রছায়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।আমরা প্রশাসনকে বলবো যারাই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করার।এদিকে গত ৫আগস্টের পর থেকে রাউজানের প্রতিটি ইউনিয়ন গ্রাম পাড়া মহল্লায় মাটি কাটা আর বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিএনপি,যুবদলে গ্রুপ উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে মারপিট হামলা মামলা চলমান রয়েছে।অনেক বিজ্ঞজন মনে করছেন এমন পরিস্থিতিতে সাধারন জনগন ও ভোটারদের আস্তা কমে যাচ্ছে দলটির উপর।হলদিয়া ইউনিয়নেও মাটি কাটা বালু ব্যবসা নিয়ে আরো বড় সংঘাতের আশংকা করছেন স্থানিয় জনসাধারন।হত্যার ঘটনায় থানায় এখনো মামলা রুজু হয়নি।লাশ চমেকের মর্গে রাখা হয়েছে বলে পুলিশের চমেক ফাঁড়ির ইনচার্য জানিয়েছেন।